অসমাপ্ত গল্প অনন্ত প্রেম


অসমাপ্ত গল্প অনন্ত প্রেম

দৃশ্য – 

স্থানঃ কিং সিটি

চরিত্রঃ আবির, আনিকা

আজ আবির সাহেব অনেকদিন পর এসেছেন  কিং সিটির নিরিবিলি এক স্থানে প্রায় সে এখানে এসে বসে থাকেন !   আজ থেকে ৫ বছর আগের কথা । ।

 

দৃশ্য   

আনিকাঃ তুমি আজকেও দেরি করলে! আচ্ছা কেন এমন কর বলতো!

আবিরঃ সরি বাবা। ভুল হয়ে গেছে! স্কুলে যেমন টিফিন পালিয়ে ঘুরতে যেতাম! আজও সেই অফিস পালিয়ে তোমার কাছে ছুটে আসা!

আনিকাঃ তোমার মনে হয় চাকুরি থাকবে না! হাহাহাহ!

আবিরঃ কি যে বল না! আমার বস অনেক ভালো মেয়ে!

আনিকাঃ কি তোমার বস মেয়ে নাকি?

আবিরঃ হুম মেয়ে ( বলেই সিগেরেট জ্বালাবে)

আনিকাঃ  ( ভয়াত্ব মুখে) আচ্ছা সে তোমায়  আবার জ্বালায় না তো! যদি পছন্দ করে ফেলে!

আবিরঃ করলে করবে! ইস সিগেরেট মেয়াদ উত্তিন নাকি বলেই ফেলে দিবে! এত টক !

আনিকাঃ করলে করবে মানে? আর তুমি মুখ এমন করছ কেন! আমি গেলাম! আর কখনো আসব না!

আবিরঃ আরে বাবা! সিগেরেট টা টক...। ( হাত ধরে ফেলবে)

 

ব্যাক টু দ্যা পয়েন্ট 

দৃশ্য 

স্থানঃ কিং সিটি

চরিত্রঃ আবির, চা ওয়ালা

আবির বসে বসে হাসবে! এবং একজন হকার কে ডাকবে! কফি দাও তো

-      স্যার কফি শেষ চা দেই ?

-      আচ্ছা দাও

-      সিগেরেট হবে! ? 

-      হবে স্যার এই নেন

 

দৃশ্য -    

আবির সিগেরেট খাচ্ছে দুইজনে হাটছে

আনিকাঃ তুমিও আজও সিগেরেট খাচ্ছো আচ্ছা কেন এমন কর বল তো! বলেই কাঁদতে থাকবে! বার বার বলি সিগেরেট খেও না! তুমি তাও খাচ্ছো!

আবিরঃ আচ্ছা বাবা এই ফেলে দিচ্ছি!!!

ব্যাক টু দ্যা পয়েন্ট 

হাত থেকে সিগেরেট পড়ে যাবে! আবির সাহেব এর! টিস্যু দিয়ে মুখ মুছতে থাকবে! চোখে লাল! হয়ে থাকবে! গরম চা থেকে ধোঁয়া উড়বে!

দৃশ্য   

আনিকা ও আবির হাঁটবে! কয়েকজন ছেলে মিলে গান গাইবে!

‘’ও জুলেখা তোমার মেয়ে কথা শুনে না যার তার সাথে ডেটিং মারে আমায় বুঝে নাহ!’’

আনিকাঃ প্লিজ ওদের কিছু বল কিন্তু খবরদার ওদের গায়ে হাত তুলবে না!

আবিরঃ ভাই প্লিজ আপনারা যান! হাত জোর করি।

আনিসঃ কি মাদারটোষ্ট বলেই থাপ্পড় লাগাবে ।

এক্সপ্রেশন আনকিতা , (গাল ধরে থাকবে আবির )

আবিরঃ প্লিজ ভাই যান , আনকিতা ভয় পাচ্ছে!

আনিসঃ তোরা যাহ! ভাগ!

তারা চলে যাওয়ার পর আনিস বন্ধুদের নিয়ে মোটর বাইক চালানোর মত করে নাচতে থাকবে!

 

ব্যাক

রাগান্বিত অবস্থায় দেখা যাবে আবির সাহেব কে! হাতের মুষ্টি বন্ধ করবে!

 

 

 

 

 

 

 

দৃশ্য  

স্থানঃ  ফ্যাক্টরি

চরিত্রঃ আবির, আনিস ও অন্যরা 

ওরা বসে থাকবে , আবির এর এন্ট্রি হবে!

আবিরঃ প্রতিটি জায়গায় ইবলিশ বাস করে! আর কিছু ইবলিশ মানুষের মনে বাস করে!

ছোট একবার এক ইবলিশ কে না  ঠিক ‘’বলেই একজনকে ঘুষি দিয়ে ফেলে দিবে! এই ভাবেই ফেলে দিয়েছিলাম!’’ তারপর না দাদা! আরেকজন কে ধরে ঠিক এই ভাবেই ( বলেই আরেক জন কে মেশিনে সাথে বাড়ি দিয়ে ফেলে দিবে) ফেলে দিয়েছিলাম!তারপর থেকে আমি আর মারামারি করি নাই! আনিকার জন্য তুই তখন বেচে গিয়েছিলি!

আনিসঃ সব লক্ষ্য করবে আর ভয় পাবে! )  তোর এত্ত বড় সাহস আমার আস্তানায় এসেছিস! বলে উঠে  দাঁড়াবে! আর আবির এর কলার ধরতে যাবে! তখন ফাইট চলবে! আনিস অবস্থায় পড়ে থাকবে আনিস!  আবির চলে যাবে!

 

 দৃশ্য  

 আবিরঃ ফ্যামিলি কে বলে চল বিয়েটা করে ফেলি৷

আনিকাঃ না মানে এখন নাহ। আর কয়েকদিন অপেক্ষা। আর আমার শরীর টা ভালো যাচ্ছে নাহ।

আবিরঃ নাহ আমি আর অপেক্ষা করতে পারছি না।

আনিকাঃ আমি যা বলি তাই!

‌আবিরঃ আরে কোথায়  চললে তুমি!

 

দৃশ্য  - ৬

এই ভাবে আমাদের অনেক দিন চললো। হঠাৎ আনিকা বদলে গেলো। আমাকে প্রচন্ড রকমের কেয়ার শুরু করলো।  বারে বারে ফোন, দেখা করতে চাওয়া... কেন জানি সেই সময় টা এতো টা বিজি হয়ে গিয়েছিলাম। একটাবারো তার কথা শুনে দেখতাম নাহ। অবহেলায় ছিল আমার কাছে একমাত্র শোভা।

ওকে বার বার কাদিয়েছি। ব্যস্ততার জন্য ওকে একটুও সময় দিতে পারিনি। তাকে অবলার মত কাদিয়েছি।

একদিন আনিকার ফোন।।।  

আবিরঃ সরি খুব ব্যস্ত ছিলাম। তাই ফোন রিসিভ করতে পারিনি।

আনিকাঃ তাও ঠিক। কেনইবা করবে। একটু দেখা করতে পারবে, সিটি পার্কে চলে এসো।

ওকে বলেই ফোন কেটে দিল আবির।

  

ব্যাক টু দ্যা পয়েন্ট

আবিরঃ ভাই আর একটু চা হবে?  হ্যানসন সিগারেট টা দিও।

হকারঃ এই যে স্যার। 

হ্যানসনঃ ম্যাচ টা,  কোথায় রাখলাম

হকারঃ এই যে স্যার।

সিগেরেট জ্বালাতেই

দৃশ্য     

স্থানঃ  কিং সিটি!

আনিকাঃ দেখো আমার সময় খুব কম! যতদিন আছি অন্তত তোমাকে পাশে চাই এই কয়েকটা দিন!

আবিরঃ মানে কি! হেসে বলবে!

আনিকাঃ মানে কিছুই নাহ! আমি আসি!

আবিরঃ তুমি কোন দেশে যাচ্ছো? এটা বলে যাও!

আনিকাঃ সেটা আমি নিজেও জানি না তবে যাচ্ছি  অনেক দূর!

আচ্ছা তোমাকে নামিয়ে দিয়ে আসি!

আনিকাঃ এখানেই তো বাসা পারবো যেতে তুমি যাও!

আবিরঃ আচ্ছা ওকে ফাইন! বলে সিগেরেট ধরাবে!

আনিকা এসে বলবে প্লিজ আর খেও নাহ!

ওকে ডান!

ভুল বশত আনিকা তার ফাইল রেখে যান!

আর ফাইলে খুলতেই বেশ কিছু রিপোর্ট~ আর সেখানে লেখা ছিল ব্লাড ক্যান্সার!

রিপোর্ট হাতে নিয়ে কেঁদে ফেললো! আবির!

আনিকা ফাইল নিতে এসে দেখল ফাইল তার হাতে!

 আনিকাঃ ভুলে রেখে গিয়েছিলাম!

আবিরঃ আমাকে বল নাই কেন! (খুব আবেগ ঘন কণ্ঠে বলবে!) 

আনিকাঃ কি বলবো?  ( সুন্দর করে হেসে বললো! )

আবিরঃ আমাকে বল নাই কেন তোমার ব্লাড ক্যান্সার! বলেই কাঁদতে থাকবে!

সব সব মিথ্যা সব সব মিথ্যা আমি মানি নাহ! তোমার কিচ্ছু হবে না! আমি তোমাকে অনেক বড় ডাক্তার

আনিকাঃ লাভ নেই , আর হয়তো ১ মাস!  তারপর!

আবির আনিকাকে জরিয়ে ধরে কাঁদতে থাকবে!

ব্যাক

হাঁটতে থাকবে আবির সাহেব! এসে  কোথাও বসবেন । একজন ছেলে আসবে

অনিকঃ স্যার অনেক তো বেলা হল এখন চলেন 

আবির সাহেবঃ নাহ আরেকটু থাকি! তুই যাহ!

 

দৃশ্য   

স্থান অফিসঃ

চরিত্রঃ অফিস বস , আবির

আবিরঃ ম্যাম আমি এক মাসের জন্য ছুটি চাইছি!

ম্যামঃ কেন ?

আবিরঃ আমার আনকিতা মনে হয় আর বেশী দিন বাচবে! 

ম্যামঃ মানে!

আবিরঃ কান্স্যার আর হয় কয়েকটা দিন । শেষবারের  মত তার খুব ইচ্ছে আমার সাথে বসে নদী দেখবে , পাখি দেখবে , নীল আকাশ দেখবে! কুয়াশামত সেই জোসনা রাত দেখবে! আবির এর চোখে পানি ।

ম্যামঃ আমি দুঃখিত মিঃ আবির । তুমি যাও , আর তার চিকিৎসার কোন প্রয়োজনে আমাকে বলো ।

আবিরঃ জি ম্যাম ।

 

দৃশ্য   

স্থান অনেক জায়গা

আবির আনকিতা নিয়ে অনেক জায়গায় ঘুরে বেরাবে , নদী দেখবে। গল্প করবে , অনেক কেয়ার করবে আনকিতা কে! নিজ হাতে খাওয়াবে!

আনকিতাঃ আবির আমাকে কথা দাও তুমি আর কখনো রাত জেগে থাকবে না! কাউকে অবহেলা করবে না! নিজের খেয়াল রাখবে! বলো! 

আবিরঃ কান্না কান্না মুখে বলবে হ্যাঁ রাখবো!

আনকিতাঃ আমি মরে গেলে তুমি আমাকে দেখতে আসবে নাহ।

আবিরঃ এক্সপ্রেশন

আনকিতাঃ আমি জানি তুমি আমার মৃত লাশটা দেখে খুব কষ্ট পাবে!

আবিরঃ কাঁদতে থাকবে!

আনকিতাঃ জানো আবির আমার না খুব বাঁচতে ইচ্ছে করে খুব ।

 

আনিকাঃ আচ্ছা তুমি কালকেই গ্রামে যাচ্ছো ।

আবিরঃ হ্যাঁ , মায়ের ওষুধ গুলো দিয়ে আসতে হবে! মাত্র ৩ দিনের ব্যাপার ।

আনিকাঃ তিন মানে আমার মত মৃত পথযাত্রীর অনেক দিন ...। ইশ! বেচে থাকার ভিতর কত যে আনন্দ তাই না আবির!

আবিরঃ নীরব হয়ে তাকিয়ে থাকবে ।

আনিকাঃ গত ঈদেও তোমাকে নিয়ে ঘুরেছি কত মজা করেছি! ভাবতেই অবাক লাগছে সেটা আমার শেষ ঈদ ছিল। আচ্ছা তুমি কাঁদছো কেন! হাসো তো!

 

ব্যাক   টু দ্যা পয়েন্ট!

অনিক সামনে বসে থাকবে  চোখ দিয়ে পানি পড়বে!

-      আচ্ছা অনিক আমি কেন শেষবারের মত ওকে দেখতে পারলাম না রে!?

সেইদিন কেন আমি গ্রামে গিয়েছিলাম!  

 

দৃশ্য   ১০ 

স্থানঃ গ্রাম অঞ্চল

গ্রাম থেকে  একটা ফোন আসবে

ফোন কলঃ আবির ভাই বলছেন?

-      জি   হ্যাঁ

-      আবির ভাই আমি আনকিতার কাজিন! আজ ভোরে আনকিতা আমাদের মাঝে আর নেই!

মোবাইল টা হাত থেকে পড়ে যাবে    এক চাপা কষ্ট – তার চোখে শুধু আনকিতাকে ভাসবে!

সে আস্তে আস্তে বসে পড়বে মাটিতে । চিৎকার করে কাঁদতে থাকবে!

 

ব্যাক   টু দ্যা পয়েন্ট!

-      খুব দেড়ি করে ফেলেছিলাম রে জানাজা টাও পাই নি!  বলেই চশমা খুলে চোখ মুছবে!

-      ফুল টা এনেছিস ,

-      হ্যাঁ স্যার

-      ও খুব গোলাপ পছন্দ করে ।

কবরের সামনে এসে দাঁড়াবে । ফুল টা রাখবে! আর কাঁদতে  কাঁদতে ..... বসে পড়বে

-      অভিমান করেছো দেড়ি করেছি বলে  , এই যে তোমার গোলাপ ফুল! তুমি না অদ্ভত আজ ১৫ বছর ধরে আমার সাথে কথা বল না! বয়স বেড়েছে আমার । কবে যে তোমার দেশে আসবো! বসে অনেক কথায় বলতে থাকবে । আস্তে আস্তে ক্যামারা দূরে সরে যাবে । অস্পষ্ট থেকে যাবে তাদের ভালোবাসা ......

0 Comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন